Sunday 27 September 2015

পাসপোর্ট ফি বেড়ে সাধারণ সাড়ে ৫, জরুরি ১১ হাজার + ভ্যাট

ঢাকা: মেয়াদ বাড়ছে বাংলাদেশি পাসপোর্টের। বতর্মানে ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট ইস্যুর নিয়ম থাকলেও শিগগিরই এই মেয়াদ দ্বিগুণ করে ১০ বছর কর‍া হচ্ছে। আর বাড়তি মেয়াদের সঙ্গে দ্বিগুণ করা হচ্ছে পাসপোর্ট ফিও। তবে পাতা বাড়ছে না পাসপোর্টে। তাই মেয়াদ দ্বিগুণ হলেও ৪৮ই থাকছে পাসপোর্টের পাতা। 

তবে বর্ধিত মেয়াদের পাশাপাশি বিদ্যমান পাঁচ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট পাওয়ার সুবিধাও বহাল থাকতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

সূত্রমতে, সাধারণ পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ৫ হাজার ৫শ’ এবং জরুরি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ১১ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে গ্রাহকদের। তবে এর সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে জরুরি পাসপোর্ট গ্রহিতাকে মোট দিতে হবে ১২ হাজার ৬শ’ ৫০ টাকা। আর সাধারণ পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ভ্যাটসহ মোট জমা দিতে হবে ৬ হাজার ৩শ’ ২৫ টাকা। 

কিন্তু বিভিন্ন প্রয়োজনে যাদের বেশি বেশি বিদেশ সফর করতে হয় তাদের পক্ষ থেকে পাসপোর্টের পাতা বাড়ানোর জোর দাবি থাকলেও আপাতত সেদিকে নজর দিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এমন পরিস্থিতিতে ব্যস্ত বিদেশ সফরকারীদের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পাতা শেষ হয়ে যাওয়ার ঘটনা আরো বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। 

পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ৩৩ শতাংশ পাসপোর্ট ফি বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ে। সে প্রস্তাবে সাধারণ এবং জরুরি পাসপোর্টের ফি ১ হাজার টাকা করে বাড়ানোর কথা বলা হয়। কিন্তু রাজস্ব আয় বাড়াতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের চেয়ে ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ৮৩ শতাংশ বর্ধিত ফি নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেয় অর্থ মন্ত্রণালয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এন এম জিয়াউল আলম বাংলানিউজকে বলেন, মূলতঃ পাসপোর্টের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আর সে কারণেই ফিও বাড়ছে। সরকারের অর্থ বিভাগ এরইমধ্যে বর্ধিত ফি এর প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। কিছুদিনের মধ্যেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে পাঁচ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট রাখারও সিদ্ধান্ত হতে পারে। অর্থাৎ কেউ চাইলে ৫ বছর বা ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট নিতে পারবেন। তবে সবকিছু নির্ভর করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের উপর। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি আমরা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশি শ্রমিক রফতানিকারক মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো পাসপোর্টের মেয়াদ বাড়ানোর সুপারিশ করে আসছিল। মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত শ্রমিকদের ভিসা নবায়ন করতে কমপক্ষে চার থেকে পাঁচ মাস মেয়াদ থাকতে হয়। এ কারণে সাড়ে চার বছর পরই শ্রমিকদের পাসপোর্ট নবায়নের প্রয়োজন পড়ে। হাতে লেখা পাসপোর্টের সময় বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকেই মেয়াদ শেষে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য পাসপোর্ট নবায়ন করা যেতো। কিন্তু এমআরপির এই যুগে শুধু ঢাকা থেকেই পাসপোর্ট ছাপানো হয়।

পরে তা কূটনৈতিক ব্যাগের মাধ্যমে দূতাবাসগুলোতে পাঠানো হয়, যাতে প্রায় মাস দুয়েকের মত সময় লেগে যায়। সেসব পাসপোর্ট চালু করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার স্বাক্ষর সাপেক্ষে বিতরণ করতে কেটে যায় আরও এক-দু সপ্তাহ। এসব কারণে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়। এই পাসপোর্ট নবায়নের ঝামেলায় পড়ে চাকরি ক্ষেত্রে অন্য দেশের কর্মীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়েও পড়তে হয় বাংলাদেশি শ্রমিকদের। শুধু পাসপোর্টের মেয়াদ কম থাকায়  চাকরিচ্যুতির ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা যায়।

এদিকে মেয়াদ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনো পর্যন্ত পাসপোর্টের বিদ্যমান ৪৮ পাতা রাখার সিদ্ধান্ত বহাল আছে। তবে প্রয়োজনে পাসপোর্টের পাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্তও আসতে পারে বলে জানান পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। 

No comments:

Post a Comment